এশার নামাজ কয় রাকাত?এশার চার রাকাত ফরজ নামাজের নিয়ম

আজকে আমরা আলোচনা করব এশার নামাজ কয় রাকাত?ashar namaj koi rakat বাংলায় দেখবো এশার চার রাকাত ফরজ নামাজের নিয়ম এবং এশার চার রাকাত সুন্নত নামাজের নিয়ম

এবং এশার নামাজের সঠিক নিয়ম, কিভাবে এশার নামাজ পড়তে হয় বেতরের নামাজ কিভাবে পড়তে হয় এবং বিতরের নামাজ কয় রাকাত বিস্তারিত

তাছাড়া আসার নামাজ কখন আদায় করতে হয় এবং এশার নামাজের ফজিলত সমূহ কি কি এশার নামাজ না পড়লে কি কি শাস্তি বিস্তারিত দেখুন ইনশাআল্লাহ

আজকে আমরা নামাজে যে বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা করব এবং এশার নামাজের হুকুম আহকাম দেখবো তা সম্পর্ণ হানাফী মাজহাব অনুসারে।

ভিন্ন মাযহাব অনুসারী অথবা লা মাজহাবি তারা আমাদের পোষ্ট নিয়ে ভিন্নমত পোষণ করবেন না আশা করি.

আমি প্রথমেই বলে নিচ্ছি শুধুমাত্র হানাফী মাযহাব অনুসারীদের জন্য এই পোস্টটি আশা করি বিষয়টি বুঝতে পারছেন ধন্যবাদ

এশার নামাজ কয় রাকাত?

এশার চার রাকাত ফরজ নামাজ যা সবার জন্য বাধ্যতামূলক এবং এই এশার নামাজ ইমামের পিছনে জামাতের সাথে আদায় করতে হয়

যদি কোন কারণে জামাতের সাথে আদায় করতে অক্ষম হয় তাহলে সেটা একা একা পড়া যায় তবে জামাতের সাথে এশার চার রাকাত ফরজ নামাজ আদায় করলে ২৭ গুণ বেশি সাওয়াব পাওয়া যায়

এশার চার রাকাত ফরজ নামাজের পূর্বে চার রাকাত সুন্নত নামাজ রয়েছে এটি ঐচ্ছিক নামাজ (সুন্নাতে যায়েদা বা গায়েরে সুন্নাত এ মুয়াক্কাদাহ ও বলা হয়ে থাকে )

এই চার রাকাত নামাজ পড়লে সাওয়াব রয়েছে তবে না পড়লে কোনো গুনাহ হবেনা

এশার চার রাকাত ফরজ নামাজের পর দুই রাকাত সুন্নত নামাজ রয়েছে এটি গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত( সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ) হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাই ওয়াসাল্লাম জীবদ্দশায় কখনো এই দুই রাকাত সুন্নত নামাজ ছাড়েনি

বিতর নামাজ কয় রাকাত?

এশার চার রাকাত ফরজ নামাজের পর দুই রাকাত সুন্নত নামাজ পড়ে তিন রাকাত বেতের নামাজ আদায় করতে হয়

এটা এশার নামাজের কোন অংশ না এই বেতরের নামাজ আপনি চাইলে তাহাজ্জুদ পড়ার পরে অথবা ফজর ওয়াক্ত হওয়ার পূর্বে পড়লে বেতের নামাজ আদায় হয়ে যাবে

তবে যাদের রাতে ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস নাই তাদের জন্য এশার নামাজ পড়ে দুই রাকাত সুন্নতের পর বেতরের নামাজ পড়া উত্তম এই নাম্বারটি আবশ্যিক নামাজ

সবার জন্য অবশ্যই পড়তে হবে বেতরের ৩রাকাত নামাজ ছেড়ে দিলে সে গুনাগার হবে পরবর্তীতে কাযা আদায় করতে হবে

অনেকে এশার নামাজ পড়ার পরে দুই রাকাত নফল নামাজ পড়ে এটি এশার নামাজের কোন অংশ নয়

নফল নামাজ হারাম সময় ব্যতীত যেকোনো সময় আদর করা যায় আর শুধুমাত্র দুই রাকাত পড়া যাবে বিষয়টি এরকম নয়

আপনি চাইলে যত খুশি নফল নামাজ আদায় করতে পারেন,নফল নামাজ পড়লে সাওয়াব আছে কিন্তু না পড়লে কোনো গুনাহ নেই

এশার ফরজ নামাজ চার রাকাত এবং ফরজের পর দুই রাকাত সুন্নত নামাজ পড়া এটা আবশ্যকীয় এবং তার পরে তিন রাকাত বিতর নামাজ পড়া এটা আবশ্যকীয়

তাহলে এশার নামাজ মোট রাকাত হলো ৪+২+৩=৯ এই ৯ রাকাত নামাজ আবশ্যকীয় না পড়লে গুনাহবে,

বাকি নফল নামাজ এবং এশার নামাজের পূর্বে চার রাকাত সুন্নাতে যায়েদা এই নামাজ আবশ্যকীয় নয় না পড়লে গুনাহ হবে না

কিন্তু পড়লে সওয়াব হবে তাই এই নামাজ গুলো ব্যতীত এশার নামাজ হলো ৯ রাকাত

এশার চার রাকাত ফরজ নামাজের নিয়ম

এশার চার রাকাত ফরজ নামাজের নিয়ম

এশার চার রাকাত ফরজ নামাজ পড়ার নিয়মএশার চার রাকাত ফরজ সালাত আদায়ের জন্য আলাদা কোনো নিয়ম নেই

সাধারণ নামাজের মতই ৪ রাকাত এশার ফরজ নামাজ আদায় করতে হয় এই চার রাকাত এশার ফরজ নামাজের জন্য আলাদা কোনো নিয়ম নেই

যেহেতু এশার চার রাকাত ফরজ নামাজ তাই পাক-পবিত্র হয়ে ওযু করে মসজিদে গিয়ে ইমামের পিছনে জামাতের সাথে আদায় করলে এশার চার রাকাত ফরজ নামাজ আদায় হয়ে যাবে

কিন্তু যদি ইমামের পিছনে নামাজ কোন কারণে মিস হয়ে যায় তাহলে একা একা চার রাকাত ফরজ নামাজ আদায় করতে হবে

ইমাম সাহেবের পিছনে এশার চার রাকাত ফরজ নামাজ আদায় করলে ইমাম সাহেবকে শুধুমাত্র অনুসরণ করে নামাজ সম্পন্ন করা যায়

কিন্তু যদি এশার নামাজ একা একা আদায় করতে হয় তাহলে কিভাবে আদায় করতে হবে নিম্নে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো

এশার চার রাকাত ফরজ নামাজের ১ম দুই রাকাত

এশার নামাজের ওয়াক্ত হওয়ার পরে ওযু করে পাক-পবিত্র হয়ে কিবলার দিকে সিনা বরাবর করে এশার চার রাকাত ফরজ নামাজ আদায় করার নিয়ত করে

তাকবীরে তাহরীমা আল্লাহু আকবার বলে নিয়ত নামাজের নিয়ত বাঁধতে হয়ে

আউযুবিল্লাহি মিনাশ শাইত্বনির রজীম পরে সানা পড়তে হবে তারপর বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম বলে সূরা ফাতিহা সম্পূর্ণ পড়তে হবে

এবং সূরা ফাতিহার সাথেকোনো সূরার সর্বনিম্ন তিন আয়াত পড়তে হবে ,কিন্তু বড় আয়াত হলে এক আয়াত পড়লেও নামাজ হয়ে যাবে

সূরা ফাতিহার সাথে সূরা মিলানোর পরে আল্লাহু আকবার হলে রুকু করতে হবে এবং রুকুতে তিন তাসবিহ পরিমাণ সময় অতিবাহিত করতে হবে

এবং সুবহানা রব্বিয়াল আযীম তাসবীহ একবার তিনবার পাঁচ বার অথবা সাতবার আদায় করতে হবে

এবং রুকু হতে সোজা হয়ে দাঁড়াতে হবে দাঁড়ানোর সময় সামিআল্লাহুলিমান হামিদা পড়তে হবে এবং দাঁড়িয়ে রাব্বানা লাকাল হামদ পড়তে হবে

তারপরে আল্লাহু আকবার বলে সিজদায় চলে যেতে হবে সিজদায় গিয়ে তিন তাসবীহ পরিমাণ সময় অতিবাহিত করতে হবে

এবং সুবহানা রাব্বিয়াল আলা এটি বেজোড় সংখ্যার বার পড়তে হবে একবার অথবা তিন বার বা পাঁচ বার অথবা সাতবার আদর করতে হবে

এভাবে দুটি সিজদা সম্মান করতে হবে দুই সিজদার মাঝখানে কিছু সময় অতিবাহিত করতে হবে দুই সিজদার মাঝখানে আল্লাহুম্মাগফিরলি পড়া যেতে পারে

এশার চার রাকাত ফরজ নামাজের শেষ দুই রাকাত

একইভাবে পরবর্তী রাকাত আদায় করতে হবে এবং দ্বিতীয় রাকাতে সময় সিজদা থেকে না দাঁড়িয়ে বসে পড়তে হবে

আত্তাহিয়াতু তে বসে তাশাহুদ পড়তে হবে এবং তাশাহুদ শেষ হলে আল্লাহু আকবার বাইরে দাঁড়িয়ে যেতে হবে

এবং বিসমিল্লাহ ভরে শুধু সূরা ফাতিহা পাঠ করতে হবে সূরা ফাতিহা সঙ্গে অন্য কোন সূরা পড়তে হবে না

শুধুমাত্র ফরজ নামাজের ক্ষেত্রে ,কিন্তু নফল নামাজের ক্ষেত্রে চার রাকাতে সুরা ফাতেহার সাথে অন্য সূরা পড়তে হয়

কিন্তু ফরজ নামাজের ক্ষেত্রে প্রথম দুই রাকাতে সুরা ফাতেহার সাথে সূরা মিলাতে হয়

তবে পরের দুই রাকাতে সুরা ফাতেহার সঙ্গে কোন সূরা পড়তে হয় না

এভাবে চার রাকাত নামাজের সর্ব শেষ রাকাতে আত্তাহিয়াতু তে বসে তাশাহুদ পড়তে হবে

তার পরে দুরুদ শরীফ পড়তে হবে এবং তার পরে দোয়ায়ে মাসুরা পড়তে হবে পড়ার পর

প্রথমে ডান দিকে আসসালামু আলাইকুম ওরাহমাতুল্লাহ বলে সালাম ফেরাতে হবে

এবং পরে বামদিকে আসসালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ বলে সালাম ফিরিয়ে নামাজ শেষ করতে হবে

এশার চার রাকাত সুন্নত নামাজের নিয়ম

এশার চার রাকাত সুন্নত নামাজ পড়ার নিয়ম হলো এই নামাজ এশার ফরজ নামাযের পূর্বে আদায় করতে হয়

এবং এশার চার রাকাত সুন্নাত নামাজের নিয়ত করতে হবে এবং এ নামাজ সুন্নাতে যায়েদা তাই না পড়লে গুনাহ হবে না পড়লে সাওয়াব হবে পড়ায় উত্তম

আমরা উপরে চার রাকাত ফরজ নামাজের নিয়ম গুলো নিয়ে আলোচনা করেছি ঠিক সেভাবেই এশার চার রাকাত সুন্নত নামাজ আদায় করতে পারবেন

তবে একটু পরিবর্তন করতে হবে আমরা এশার ফরজ নামাজের প্রথম দুই রাকাতে সুরা ফাতেহার সঙ্গে অন্য আরেকটি সূরা মিলিয়েছি

কিন্তু পরের দুই রাকাতে সাথে আমরা শুধু সূরা ফাতিহা পড়েছি অন্য কোন সূরা সূরা ফাহিহার সাথে পড়িনি

কিন্তু এশার চার রাকাত সুন্নত নামাজ পড়ার নিয়ম হলো চার রাকাতে সূরা ফাতিহা সঙ্গে অন্য আরেকটি সূরা মিলাতে হবে

অর্থাৎ অন্য আরেকটি সূরা পড়তে হবে

বাকি নিয়ম কানুন সব একই থাকবে

সুতরাং আশা করি আপনি বুঝতে পেরেছেন কিভাবে এশার চার রাকাত সুন্নত নামাজ পড়বেন

সমাপনী

এশার নামাজ কয় রাকাত এশার চার রাকাত ফরজ নামাজের নিয়ম এশার চার রাকাত সুন্নত নামাজের নিয়ম

বেতরের নামাজ কয় রাকাত আশাকরি বিস্তারিত ভালোভাবে জানতে পেরেছেন

যদি আপনাদের মনে কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে আমাদের কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করে জানাতে পারেন

আমরা খুব দ্রুতই আপনার প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ

যদি পোস্টটি আপনাদের ভালো লাগে তাহলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন

ভালো থাকবেন সবাইকে ভালো রাখবেন আসসালামু আলাইকুম

1 thought on “এশার নামাজ কয় রাকাত?এশার চার রাকাত ফরজ নামাজের নিয়ম”

Leave a Comment

%d bloggers like this: